গঠন ও আকার অনুযায়ী কম্পিউটারের প্রকারভেদ ।
কম্পিউটারের প্রকারভেদ।
কম্পিউটারের প্রকারভেদ। |
এই আনুচ্ছেদে যে বিষয়গুলো নিয়ে আলোচনা করা হবে তা হলো- কম্পিউটারের প্রকারভেদ,
গঠন ও ক্রীড়া নীতির উপর ভিত্তি করে কম্পিউটারের প্রকারভেদ। আকার আয়তন, কাজ করার ক্ষমতা, স্মৃতি ও সুযোগ ইত্যাদির উপর ভিত্তি করে কম্পিউটারের প্রকারভেদ। এনালগ কম্পিউটার, ডিজিটাল কম্পিউটার, হাইব্রিড কম্পিউটার। সুপার কম্পিউটার, মেইন ফ্রেম কম্পিউটার, মিনি কম্পিউটার, এবং মাইক্রো কম্পিউটার বা পার্সোনাল কম্পিউটার।
কম্পিউটারের প্রকারভেদ - Classification of Computer
গঠন ও ক্রীড়া নীতির উপর ভিত্তি করে কম্পিউটারকে বিভিন্ন ভাবে ভাগ করা যায় ।
- এনালগ কম্পিউটার,
- ডিজিটাল কম্পিউটার ও
- হাইব্রিড কম্পিউটার ।
এনালগ কম্পিউটার - Analogue Computer
যে সকল কম্পিউটার বৈদ্যুতিক সংকেতের উপর নির্ভর করে ইনপুট গ্রহণ করে এবং প্রক্রিয়াকরণের কাজ সম্পাদন করে , সেসব কম্পিউটার কে এনালগ কম্পিউটার বলা হয়।
তথ্য প্রক্রিয়াকরণ ও হিসাবের জন্য অ্যানালক কম্পিউটারের বর্ণ বা অংকের পরিবর্তে ক্রমাগত
পরিবর্তনশীল বা অ্যানালগ পদ্ধতি সংকেত ব্যবহার করা হয়। তথ্য প্রক্রিয়াকরণ ও হিসাবের পর প্রাপ্ত ফলাফল সাধারণত মিটার, ওসিলোস্কোপ ইত্যাদিতে প্রদর্শিত হয়। মোটর গাড়ির স্পিডোমিটার, স্লাইড রুল, অপারেশনাল এমপ্লিফায়ার ইত্যাদিতে এনালক কম্পিউটার ব্যবহার করা হয়।
সাধারণত তাপ চাপ তরল কথাটির প্রবাহ ইত্যাদির উঠা-নামা অথবা হ্রাস-বৃদ্ধির পরিমাপ করার জন্য অ্যানালক কম্পিউটার ব্যবহার করা হয়। এছাড়াও উড়োজাহাজ, গাড়ি, মহাকাশযান ইত্যাদির গতিবেগ, তরল, বায়বীয় ও কঠিন পদার্থের চাপ এবং কোন বিশেষ স্থানের বা কক্ষে তাপমাত্রা পরিমাপের জন্য এনালগ কম্পিউটার ব্যবহার করা হয়। এনালগ কম্পিউটার এর ফলাফল সূক্ষ্মতা তুলনামূলক অনেক কম।
ডিজিটাল কম্পিউটার - Digital Computer
যে সকল কম্পিউটার বাইনারি পদ্ধতিতে অর্থাৎ ডিজিটাল পদ্ধতিতে ক্রিয়া সম্পাদন করে থাকে সেসব কম্পিউটারকে ডিজিটাল কম্পিউটার বলা হয়। তথ্য প্রক্রিয়াকরণ ও হিসাবের জন্য ডিজিটাল কম্পিউটার বৈদ্যুতিক সিগন্যালের পরিবর্তে ডিজিট জিরো অথবা ওয়ান ব্যবহার করে। ডিজিটাল কম্পিউটারে তথ্য প্রক্রিয়াকরণ ও হিসাবের জন্য প্রাপ্ত ফলাফল সাধারণত মিটারে প্রদর্শিতি হয়।
ডিজিটাল কম্পিউটারের গতি ও কার্যকারিতা এনালগ কম্পিউটারের চেয়ে অনেক গুণ বেশি এবং ভালো। আবার ডিজিটাল কম্পিউটারের ফলাফল সুক্ষতা এনালগ কম্পিউটারের তুলনায় অনেক বেশি। বিশ্বের প্রথম ডিজিটাল কম্পিউটার এবিসি। বর্তমানে সকল কম্পিউটার-ই ডিজিটাল কম্পিউটার ।
হাইব্রিড কম্পিউটার - Hybrid Computer
হাইব্রিড কম্পিউটার হচ্ছে এনালগ এবং ডিজিটাল উভয় পদ্ধতির সমন্বয়। ইনপুট এনালগ পদ্ধতির হয় এবং আউটপুট ডিজিটাল পদ্ধতির। হাইব্রিড কম্পিউটার অত্যন্ত দামি এই ধরনের কম্পিউটার কে সংকর কম্পিউটারও বলা হয়। কেবলমাত্র বিশেষ বিশেষ ক্ষেত্রে হাইব্রিড কম্পিউটার ব্যবহার করা হয়।
যেমন- মিসাইল, বৈজ্ঞানিক গবেষণা, রাসায়নিক দ্রব্যের গুনাগুন নির্ণয়, পরমাণুর প্রকৃতি নির্ণয়, গবেষণাগারে ওষুধের মান নির্ণয় ইত্যাদি কাজে হাইব্রিড কম্পিউটার ব্যবহার করা হয়। শরীরের তাপমাত্রা রোগীর রক্তচাপ হৃদযন্ত্রের ক্রিয়া ইত্যাদি ক্ষেত্রে ওই ধরনের কম্পিউটার ব্যবহার করা হয়
আকার আয়তন, কাজ করার ক্ষমতা, স্মৃতি ও সুযোগ ইত্যাদির উপর ভিত্তি করে ডিজিটাল কম্পিউটারকে প্রধানত চার ভাগে ভাগ করা হয়।
এগুলো হলো-
- সুপার কম্পিউটার,
- মেইন ফ্রেম কম্পিউটার,
- মিনি কম্পিউটার, এবং
- মাইক্রো কম্পিউটার বা পার্সোনাল কম্পিউটার।
সুপার কম্পিউটার - Super Computer
ক্ষমতা আকৃতি ইত্যাদির ভিত্তিতে অতি বড় কম্পিউটারকে বলা হয় সুপার কম্পিউটার। এ কম্পিউটার অত্যন্ত শক্তিশালী এবং অত্যন্ত দ্রুতগতিতে কাজ করতে পারে। কম্পিউটারটি প্রতি সেকেন্ডে বিলিয়ন বিলিয়ন হিসাব করতে সক্ষম।সারা বিশ্বে সুপার কম্পিউটারের সংখ্যা খুব বেশি নয় সুখ ও বৈজ্ঞানিক গবেষণা বিপুল পরিমাণ তথ্য বিশ্লেষণ, নব যান, জঙ্গিবিমান ক্ষেপণাস্ত নিয়ন্ত্রণ এবং মহাকাশ গবেষণা ইত্যাদি কাজী সুপার কম্পিউটার ব্যবহার করা হয়। বর্তমানে বিশ্বের দ্রুততম সুপার কম্পিউটারটি যথাক্রমে Fugaku, Summit, Sierra, SuwayTaihuLigh। ভারত পরম নামে একটি সুপার কম্পিউটার তৈরি করে সারা বিশ্বের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছে।
মেইনফ্রেম কম্পিউটার - Mainframe Computer
সুপার কম্পিউটারের যে আকারে ছোট কিন্তু পার্সোনাল বা মাইক্রো কম্পিউটার নয়, এই ধরনের কম্পিউটার গুলো আসলে সুপার কম্পিউটার । মেইন ফ্রেম কম্পিউটার হলো এমন এক ধরনের কম্পিউটার যার সাথে অনেকগুলো কম্পিউটার যুক্ত করা থাকে, একই সঙ্গে অনেকগুলো মানুষ এক কম্পিউটার ব্যবহার করে কাজ করতে পারে।
উদাহরণঃ
ব্যাংক, বীমা, অর্থ লগ্নিকারী প্রতিষ্ঠান এবং বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা গবেষণা কার্যক্রম পরিচালনার জন্য কম্পিউটার ব্যবহার করে থাকে।
মিনি কম্পিউটার - Mini Computer
মেইনফ্রেম কম্পিউটার এর চেয়ে আকারে ছোট কিন্তু পার্সোনাল কম্পিউটারের চেয়ে আকারে বড় এ ধরনের। মেইন ফ্রেম কম্পিউটার ও মিনি কম্পিউটারে একই ধরনের কাজ করা যায় । মিনি কম্পিউটার আকারে ছোট এবং কাজের ক্ষমতাও কম।
শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ক্লিনিক হাসপাতাল বড় বড় কারখানা বহু জাগতিক কোম্পানি প্রচলিত গবেষণায় ও বিশ্লেষণ কাদের মিনি কম্পিউটার ব্যবহার করা হয়
কয়েকটি মিনি কম্পিউটারের উদাহরণ-
PDP- 2
IBM S/34
IBM S/36
NCR S/9290
NCR
NOVA3
মাইক্রো কম্পিউটার - Micro Computer
মেইন ফ্রেম মিনি কম্পিউটারের তুলনায় মাইক্রো কম্পিউটারের আকার অনেকক্ষণ ছোট হয়। এজন্য মাইক্রো কম্পিউটার কে পার্সোনাল কম্পিউটার বা পিসি বলা হয়। মাইক্রো কম্পিউটার হচ্ছে কারিগরি নাম আর পার্সোনাল কম্পিউটার বা পিসি হচ্ছে চলতি নাম।
১৯৭৫ সালে তড়িৎ প্রকৌশলী হেনরি এডওয়ার্ড রবার্ট কর্তৃক ডিজাইনকর্তৃক Altair-880 কে প্রথম প্রসেসর ভিত্তিক কম্পিউটার হিসেবে গণ্য করা হয় । এজন্য হেনরি এডওয়ার্ড রবার্টকে মাইক্রো কম্পিউটারের জনক বলা হয়।
মাইক্রো কম্পিউটারকে কয়েকটি শ্রেণীতে ভাগ করা যায়।
যথাঃ
- ডেক্সটপ,
- ল্যাপটপ বা নোটবুক,
- নোটবুক,
- পামটপ
- ট্যাবলেট পিসি বা ট্যাব,
- ফ্যাবলেট
ডেক্সটপ - Desktop
এ জাতীয় কম্পিউটার ডেক্স বা টেবিলের ওপর স্থাপন করা হয়। এ ধরনের কম্পিউটারকে ডেসকে স্থাপন করা হয়। এজন্য এ ধরনের কম্পিউটার কে ডেস্কটপ বলা হয়।
ল্যাপটপ বা নোটবুক - Laptop
981 সালে এপসম কোম্পানি প্রথম ল্যাপটপ কম্পিউটার প্রবর্তন করেন। ল্যাপটপ কম্পিউটার দেখতে অনেকটা ছোট ব্রিফকেসের মত। ল্যাপ বা কোলের উপর স্থাপন করা যায়, এমন ছোট আকারের কম্পিউটারকে ল্যাপটপ বলা হয়। এর উপরের অংশে থাকে একটি সমতল এলসিডি বা এলইডি স্ক্রিন এবং নিচের অংশে থাকে কিবোর্ড পাওয়ার বাটন এবং ট্রান্সপেট।
এতে মানুষের পরিবর্তে ট্রান্সপোর্ট ব্যবহার করা হয়। ল্যাপটপ কম্পিউটার পাওয়ার বুক ইত্যাদি নামে পরিচিত। দেখতে স্মার্ট, ওজনের হালকা এবং সহজে বহনযোগ্য বিদ্যুৎ সাশ্রয়ী হয় দিন দিন ল্যাপটপের ব্যবহার উল্লেখযোগ্য হারে বৃদ্ধি পাচ্ছে।
নোটবুক - Notebook
নোটবুক কম্পিউটার সাধারণত ল্যাপটপ কম্পিউটারের চেয়ে আকারে ছোট এবং ওজন কম হয় সহজে গ্রহণযোগ্য দেখতে অনেকটা নোটবুকের মত বিধায় এর নামকরণ করা হয়েছে। এ ধরনের কম্পিউটার গুলোতে কিবোর্ড পাওয়ার বাটন টাচপ্যাড এবং ডিসপ্লে হিসেবে এলসিডি বা এলইডি যুক্ত থাকে। কিন্তু কোন প্রকার অপটিক্যাল ডিস্ক ড্রাইভ থাকে না।
পামটপ - Palmtop
Palmtop এর পুরো নাম পারসোনাল ডিজিটাল অ্যাসিস্ট্যান্ট ১৯৯৩ সালে ইলেকট্রিক নির্মাতা পার্সোনাল ডিজিটাল অ্যাসিস্ট্যান্ট তৈরি করেন। পিডিএ এর প্রাথমিক ভার্সন ছিল অ্যাপেলের নিউটন।
এ ধরনের কম্পিউটার ক্ষুদ্রাকৃতির এবং দেখতে অনেকটা ক্যালকুলেটরের মত যা হাতের তালুতে রেখে ব্যবহার করা যায়। এমনকি পকেটে রেখেও ব্যবহার করা যায়। এটি পকেট কম্পিউটার নামে পরিচিত সাধারণত টাচ স্ক্রিন ও ডিজিটাল পেন এর সাহায্যে এ জাতীয় কম্পিউটার গুলো নিয়ন্ত্রণ করা হয়ে থাকে।
ট্যাবলেট পিসি বা ট্যাব - tablet PC or Tab
ট্যাবলেট লেটার সাইজের সিলেটের অনুরুপ এক ধরনের কম্পিউটার যার স্ক্রিনে হাতের আঙ্গুল স্পর্শ করে প্রয়োজনীয় নির্দেশ বার্থডেটা প্রদান করা অথবা ডিজিটাল কলম দিয়ে লেখা বা ড্রয়িং করা যায়। ট্যাবলেট পিসিতে ভয়েস ইনপুট এর ব্যবস্থা থাকে যার সাহায্যে ভয়েস কমান্ড বা নির্দেশ প্রদান করা যায় অ্যাপেল কর্তৃক বাজারজাতকৃত ট্যাবলেটের পিসি আই প্যাড।
স্মার্ট ফোন - Smart Phone
স্মার্ট ফোন হলো বিশেষ ধরনের মোবাইল ফোন যা মোবাইল কম্পিউটার প্লাটফর্ম এর উপর ভিত্তি করে প্রতিষ্ঠিত আইবিএম সাইমন ছিল বিশ্বের প্রথম স্মার্টফোন এতো ইন কর্পোরেট দ্বারা নির্মিত একটি
আধুনিক ইন্টারনেট ও মাল্টিমিডিয়া সংযুক্ত স্মার্ট ফোন হলো i-phone 2017
আপেলের সাবেক সিও স্টিভ জবস প্রথম ২০০৭ সালে আইফোন অবমুক্ত করেন।
কম্পিউটারের প্রকারভেদ, এনালগ কম্পিউটার, ডিজিটাল কম্পিউটার, হাইব্রিড কম্পিউটার।সুপার কম্পিউটার, মেইন ফ্রেম কম্পিউটার, মিনি কম্পিউটার, এবং মাইক্রো কম্পিউটার বা পার্সোনাল কম্পিউটার।
প্রসঙ্গিক প্রশ্নোত্তর-
১। আইফোনের (i-phone) এর প্রস্তুত কারক কে?
উত্তরঃ অ্যাপেল ইনকর্পোরেটেড।
২। নোকিয়ার বর্তমান নাম কি?
উত্তরঃ মাইক্রোসফট মোবাইল ।
৩। টাচস্ক্রিন মোবাইল ফোনের আবিষ্কারক কে?
উত্তরঃ স্টিভ জবস ।
৪। PDA
উত্তরঃ Personal Digital Assistant।
৫। পাম্পটম (Pamtop) কি?
উত্তরঃ Small Computer ।
৬। What is Laptop?
উত্তরঃ Small Computer ।
৭। প্রথম ল্যাপটপ কম্পিউটার প্রবর্তন করে কোন কোম্পানি?
উত্তরঃ এপসন , ১৯৮১ সালে।
৮। পার্সোনাল কম্পিউটারের কারিগরি নাম কি?
উত্তরঃ মাইক্রোকম্পিউটার।
৯। সুপার কম্পিউটারের চেয়ে আকারে ছোট কম্পিউটারকে কি বলা হয়?
উত্তরঃ মেইনফ্রেম কম্পিউটার।
১০। অ্যানালগ ও ডিজিটাল কম্পিউটারের সমন্বয়ে কোন ধরনের কম্পিউটার গঠিত হয়।
উত্তরঃ হাইব্রিড কম্পিউটার।
১১। Older Computer were-
উত্তরঃ Analog।
১২। Digital Data is a combination of -
উত্তরঃ Combination of 0 and 1।
১৩। The Digital Computer was -
উত্তরঃ ABC (Atanasoff Berry Computer)।
১৪। ডিজিটাল টেলিফোনের প্রধান বৈশিষ্ট্য -
উত্তরঃ ডিজিটাল সিগন্যাল বার্তা প্রেরণ ।
১৫। Full form of CPU-
উত্তরঃ Central Processing Unite।