সংখ্যার বিভাজ্যতার নিয়ম।

 ৬ষ্ট শ্রেণি - গণিত লেকচার সীট- সংখ্যার বিভাজ্যতার নিয়ম।

এখানে ৬ষ্ট শ্রেণির গণিত বইয়ের অনুশীলনী- ১.২ এর লেকচার সীটটি উপস্থাপন করা হয়েছে। এই অনুচ্ছেদটিতে যে সব বিষয় অন্তভূক্ত করা হয়েছে তা হলো- মৌলিক সংখ্যা , যৌগিক সংখ্যা , সহমৌলিক সংখ্যা , সংখ্যার বিভাজ্যতার নিয়ম ইত্যাদি। 

মৌলিক সংখ্যা  Prime numbers

১ হতে বড় যে সকল সংখ্যার ১ ও ঐ সংখ্যা ব্যতিত অন্য কোন গুননীয়ক থাকে না , তাদেরকে মৌলিক সংখ্যা বলা হয়।
অন্যভাবে,
যে সব সংখ্যাকে ১ এবং ঐ সংখ্যা ব্যতিত অন্য কোন সংখ্যা দ্বারা নিঃশেষে ভাগ করা যায় না , সে সব সংখ্যাকে মৌলিক সংখ্যা বলা হয়। 

উদাহরণঃ
 ২,৩, ৫, ৭,১১ সংখ্যাগুলোর ১ ব্যতিত অন্য কোন গুণনীয়ক নাই ।
সুতরাং এগুলো মৌলিক সংখ্যা । 


যৌগিক সংখ্যা Composite numbers
যে সকল সংখ্যার ১ এবং ঐ সংখ্যা ছাড়াও গুণনীয়ক থাকে, তাদের যৌগিক সংখ্যা বলা হয়। 
সহজভাবে,
যে সব সংখ্যাকে ১ এবং ঐ সংখ্যা ব্যতিত অন্য যে কোন সংখ্যা দ্বারা নিঃশেষে ভাগ করা যায় , সে সব সংখ্যাকে মৌলিক সংখ্যা বলা হয়।

উদাহরণঃ 
 ৯, ১২, ১৪, ১৫ সংখ্যাগুলোর একটি গুণনীয়ক যথাক্রমে ৩, ৩, ২, ৩। অর্থাৎ ১ ব্যাতিত এদের আরও গুণনীয়ক রয়েছে । সুতরাং এগুলো যৌগিক সংখ্যা। 

 

সহমৌলিক সংখ্যা Coprime numbers
দুই বা ততোধিক সংখ্যার সাধারণ গুণনীয়ক কেবল মাত্র যদি ১ হয় তাহলে সেই সংখ্যাগুলোকে পরস্পর সহমৌলিক সংখ্যা বলা হয়। 

উদাহরণঃ
১৪ = ২ ৭, ১৫ = ৩ ৫, ১২১ = ১১ ১১
এখানে, 
১৪, ১৫, ১২১ এর মধ্যে ১ ছাড়া অন্য কোন সাধারণ গুণনীয়ক নেই । 
সুতরাং ১৪, ১৫, ১২১ এরা পরস্পর সহমৌলিক সংখ্যা। 

সংখ্যার বিভাজ্যতার নিয়ম। Law of divisibility of numbers.

২ দ্বারা বিভাজ্যতার নিয়ম

কোন সংখ্যার একক স্থানীয় অঙ্কটি শূন্য ( ০ ) অথবা জোড় সংখ্যা হলে , প্রদত্ত সংখ্যাটি ২ দ্বারা বিভাজ্য হবে। 
উদাহরণঃ
১০, ১২, ১৪, ১৬, ১৮ সংখ্যাগুলোর শেষ বা একক স্থানীয় অঙ্কগুলো শূন্য বা জোড় সংখ্যা এবং সংখ্যাগুলো ২ দ্বারা বিভাজ্য। 


৪ দ্বারা বিভাজ্যর নিয়ম

কোন সংখ্যার একক এবং দশক স্থানীয় অঙ্ক দুটি দ্বারা গঠিত সংখ্যা ৪ দ্বারা বিভাজ্য হলে , সেই সংখ্যাটি ৪ দ্বারা বিভাজ্য হবে।
উদাহরণঃ
৩৫১২ সংখ্যাটির শেষ দুটি অঙ্ক সমন্বয়ে সংখ্যাটি হয় ১২ যা ৪ দ্বারা বিভাজ্য । সুতরাং ৩৫১২ সংখ্যাটি ৪ দ্বারা বিভাজ্য হবে।


৫ দ্বারা বিভাজ্যর নিয়ম

কোন সংখ্যার একক স্থানীয় অঙ্ক শূন্য ( ০ ) অথবা পাঁচ ( ৫ ) হলে সংখ্যাটি ৫ দ্বারা বিভাজ্য হবে।

উদাহরণঃ
৫২৫, ৬৫৪০ সংখ্যা দুটির একক স্থানীয় মান যথাক্রমে ৫ এবং ০ । 
সুতরাং ৫২৫ ও ৬৫৪০ সংখ্যা দুটি ৫ দ্বারা বিভাজ্য হবে। 


৩ দ্বারা বিভাজ্যর নিয়ম

কোন সংখ্যা অঙ্কগুলোর যোগফল ৩ দ্বারা বিভাজ্য হলে উক্ত সংখ্যাটি ৩ দ্বারা বিভজ্য হবে।

উদাহরণঃ
১৪৭ সংখ্যাটির অঙ্কগুলোর যোগফল = ১ ৪ ৭ বা ১২ যা ৩ দ্বারা বিভাজ্য ।
সুতরাং ১৪৭ সংখ্যাটি ৩ দ্বারা বিভাজ্য হবে।
আবার, 
১৪৮ সংখ্যাটির অঙ্কগুলোর যোগফল = ১ ৪ ৮ বা ১৩ যা ৩ দ্বারা বিভাজ্য নয়। 
সুতরাং ১৪৮ সংখ্যাটি ৩ দ্বারা বিভাজ্য হবে না।


৬ দ্বারা বিভাজ্যর নিয়ম

কোন সংখ্যা ২ এবং ৩ দ্বারা বিভাজ্য হলে সংখ্যাটি ৬ দ্বারা বিভাজ্য হবে।
উদাঃ
১২, ১৮ ও ১৪৭ সংখ্যাগুলো ২ এবং ৩ দ্বারা বিভাজ্য ।
সুতরাং  প্রদত্ত সংখ্যাগুলো ৬ দ্বারাও বিভাজ্য হবে।


৯ দ্বারা বিভাজ্যর নিয়ম

কোন সংখ্যায় বিদ্যমান অঙ্কগুলোর সমষ্টি ৯ দ্বারা বিভাজ্য হলে , সংখ্যাটি ৯ দ্বারা বিভাজ্য হবে। 

উদাহরণঃ
১৯৮ সংখ্যাটিতে অঙ্কগুলোর যোগফল = ১৯৮ বা ১৮ যা ৯ দ্বারা বিভাজ্য ।
সুতরাং ১৯৮ সংখ্যাটি ৯ দ্বারা বিভাজ্য হবে।


১০ দ্বারা বিভাজ্যতার নিয়ম

সংখ্যাটির এককের ঘরের অঙ্কটি শূণ্য যদি হয় তবে সংখ্যাটি অবশ্যই ১০ দ্বারা বিভাজ্য হবে।

উদাহরণঃ
৫৪৯৭৮০ সংখ্যাটিতে একক স্থানীয় অঙ্কটি শূন্য বা ০ , সুতরাং সংখ্যাটি ১০ দ্বারা বিভাজ্য।

১১ দ্বারা বিভাজ্যতার নিয়ম

যদি কোনো সংখ্যার জোড় ও বিজোড় স্থানের অঙ্কগুলির যোগফলের বিয়োগফল  শূন্য ( ০ ) অথবা এগার ( ১১) দ্বারা বিভাজ্য কোনো সংখ্যা হয়, তবে সংখ্যাটি ১১ দ্বারা বিভাজ্য হবে।

উদাহরণঃ
৬২৬৭৮ সংখ্যাটির জোড় স্থানের অঙ্কগুলির যোগফল (২ + ৭) বা ৯ , বিজোড় স্থানের অঙ্কগুলির যোগফল (৬ + ৬ + ৮) বা  ২০ এবং এদের বিয়োগফল (২০ – ৯) বা ১১।
সুতরাং ৬২৬৭৮  সংখ্যাটি ১১ দ্বারা বিভাজ্য।

১৩ দ্বারা বিভাজ্যতার নিয়ম

সংখ্যাটির ডান দিক থেকে তিনটি করে অঙ্ক নিয়ে তৈরী অঙ্কগুলির জোড় স্থান ও বিজোড় স্থানের যোগফলের বিয়োগফল যদি শূন্য ( ০ ) অথবা তের (১৩) দ্বারা বিভাজ্য হয়, তবে সেই সংখ্যাটি ১৩ দ্বারা বিভাজ্য। 

উদাহরণঃ
৫০৫১৬৬১০৩ সংখ্যাটির ডানদিক থেকে তিনটি করে সংখ্যা নিয়ে বিজোড় স্থানের যোগফল = ১০৩ + ৫০৫ বা ৬০৮ এবং জোড় স্থানের সংখ্যা = ১৬৬ ; এদের বিয়োগফল = ৬০৮ – ১৬৬ বা  ৪৪২ যা  ১৩ দ্বারা বিভাজ্য। 
সুতরাং সংখ্যাটি ১৩ দ্বারা বিভাজ্য।

১৫ দ্বারা বিভাজ্যতার নিয়ম

প্রদত্ত সংখ্যাটি  যদি  ৩ ও ৫ দ্বারা বিভাজ্য হয় তবে উক্ত সংখ্যাটি ১৫ দ্বারা বিভাজ্য হবে। 

উদাহরণঃ  
১৩৫ সংখ্যাটি ৩ ও ৫ দ্বারা বিভাজ্য, তাই সেটি ১৫ দ্বারাও বিভাজ্য।


১৮ দ্বারা বিভাজ্যতার নিয়ম

প্রদত্ত সংখ্যাটি যদি ২ ও ৯ দ্বারা বিভাজ্য হয় তাহলে সংখ্যাটি ১৮ দ্বারাও বিভাজ্য হবে।

উদাহরণঃ 
১০০৮ সংখ্যাটি ২ ও ৯ দ্বারা বিভাজ্য, তাই ১৮ দ্বারাও বিভাজ্য।


২৫ দ্বারা বিভাজ্যতার নিয়ম

সংখ্যাটির শেষ দুটি অঙ্ক দ্বারা গঠিত সংখ্যা যদি ২৫, ৫০, ৭৫ অথবা ০০ হয়, তাহলে সংখ্যাটি, ২৫ দ্বারাও বিভাজ্য হবে।


১২৫ দ্বারা বিভাজ্যতার নিয়ম

প্রদত্ত সংখ্যাটির শেষ যদি  তিনটি অঙ্ক ‘০০০’ হয়, অথবা  ’১২৫’ দ্বারা বিভাজ্য হয় তবে সংখ্যাটি ১২৫ দ্বারাও বিভাজ্য হবে।


৩, ৭, ১১, ১৩, ৩৭ ও ৩৯ দ্বারা বিভাজ্যতার নিয়ম

কোনো ছয় অঙ্ক বিশিষ্ট সংখ্যা যদি একই অঙ্ক বার বার থাকে  তবে তা ৩, ৭, ১১, ১৩, ৩৭ ও ৩৯ দ্বারা বিভাজ্য হবে।

উদাহরণঃ
১১১১১১ , ২২২২২২, ৩৩৩৩৩৩ ইত্যাদি।

আবার , যে কোনো দুইটি অঙ্ক যদি পরপর তিনবার থাকে তাহলেও সংখ্যাটি ৩, ৭, ১৩, ৩৭, ৩৯ দ্বারা বিভাজ্য। 

উদাহরণঃ 
১৫১৫১৫, ১৬১৬১৬, ২৯২৯২৯ ইত্যাদি।

একইভাবে,কোন সংখ্যায় তিনটি অঙ্ক যদি পরপর দুইবার থাকলে সংখ্যাটি ৭ ও ১৩ দ্বারা বিভাজ্য। 

উদাহরণঃ 
৭১৩৭১৩, ৫৪৮৫৪৮ ইত্যাদি।
Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url