৭ম শ্রেণীর বিজ্ঞান বইয়ের ১ম অধ্যায়- ”নিম্নশ্রেণির জীব” এর লেকচার সীট

 ৭ম শেণীর প্রথম অধ্যায়- নিম্নশ্রেণির জীব । প্রাণীজগতের শ্রেণীবিন্যাস। লেকচার সীট। 

শ্রেণিবিন্যাস - Hierarchy

সহজে সুশৃঙ্খলভাবে বিশাল প্রাণীজগৎকে জানার জন্য বিন্যস্ত করার পদ্ধতিকে শ্রেণিবিন্যাস বলে। প্রাণীদেহ বিদ্যমান বিভিন্ন বৈশিষ্ট্য ও বিভিন্ন প্রাণীর মধ্যে মিল, অমিল ও পরস্পরের মধ্যে যে সম্পর্ক রয়েছে তার ওপর ভিত্ত করে এটি করা হয়। 

শ্রেণীবিন্যাসবিদ্যা - Taxonomy

প্রয়োজনের তাগিদে আজ শ্রেণিবিন্যাসবিদ্যা জীববিজ্ঞানের অন্যতম একটি স্বতন্ত্র শাখা হিসেবে গড়ে উঠেছে। 

দ্বিপদ নামকরণ বা বৈজ্ঞানিক নামকরণ - Binomial nomenclature or scientific nomenclature

একটি প্রাণীর বৈজ্ঞানিক নাম দুই অংশ বা পদবিশিষ্ট হয়। একে দ্বিপদ নামকরণ বা বৈজ্ঞানিক নামকরণ বলা হয়। যেমনঃ মানুষের বৈজ্ঞানিক নাম Homo Sapiens. এই নাম ল্যাটিন অথবা ইংরেজী ভাষায় লিখতে হয়। 

প্রাণীজগতের শ্রেণিবিন্যাস - Classification of animals

অ্যানিমেলিয়া জগতের প্রাণীদেরকে নয়টি পর্বে ভাগ করা হয়েছে । এই নয়টি পর্বের প্রথম আটটি পর্বের প্রাণীরা অমেরুদণ্ডী এবং শেষ পর্বের প্রাণীরা মেরুদণ্ডী । 

অমেরুদণ্ডী প্রাণীর শ্রেণিবিন্যাস - Classification of Invertebrates

অমেরুদণ্ডী প্রাণীদের আটটি পর্ব নিম্নরুপঃ 
১। পরিফেরা, ২। নিডারিয়া, ৩। প্লাটিহেলমিনথিস, ৪। নেমাটোডা, ৫। অ্যানিলিডা, ৬। আর্থোপোডা, ৭। মলাস্কা, ৮। একাইনোডার্মাডা। 

মেরুদণ্ডী প্রাণীর শ্রেণিবিন্যাস - Classification of Vertebrates

মেরুদণ্ডী প্রাণীদের পর্ব হলো কর্ডাটা। এটি তিনটি উপপর্বে বিবক্ত । যথাঃ ১। ইউরোকর্ডাটা, ২। সেফালোকর্ডাটা, ৩। ভার্টিব্রাটা। ভার্টিব্রাটা উপপর্বের প্রাণীরাই মেরুদণ্ডী প্রাণী হিসাবে পরিচিত। এদের ৭টি শ্রেণিতে ভাগ করা হয়েছে। যথাঃ ১। সাইক্লোস্টামাটা ২। কন্ড্রিকথিস ৩। অসটিকথিস ৪। উভচর ৫। সরীসৃপ ৬। পক্ষীকুল, ৭। স্তন্যপায়ী। 

প্রাণীজগতে মানুষের অবস্থান - Man's position in the animal world

মানুষের অবস্থান কর্ডাটা পর্বের ভার্টিব্রাটা উপপর্বের স্তন্যপায়ী (Mammalia) শ্রেণির প্রাণী। 

শ্রেণিবিন্যাসের প্রয়োজনীয়তা - Classification Requirements 

শ্রেণিবিন্যাসের সাহায্যে পৃথিবীর সকল জীব সম্বন্ধে বিজ্ঞানসম্মত উপায়ে সহজে, অল্প পরিশ্রমে ও অল্প সময়ে জানা যায়। জীব জগতের বিভিন্ন পরিবর্তন জানতে ও নতুন প্রজাতি শনাক্ত করতে শ্রেণিবিন্যাস প্রয়োজন। 

সংক্ষিপ্ত প্রশ্নের উত্তরঃ

প্রশ্নঃ ১। কোনো প্রাণীর দ্বিপদ নামে কয়টি অংশ থাকে? এ অংশগুলো কী কী? মানুষের বৈজ্ঞানিক নাম কী?

উত্তরঃ কোনো প্রাণীর দ্বিপদ নামে ২টি অংশ থাকে। একটি অংশ  ‘গণ’ অপরটি ‘প্রজাতি’। মানুষের বৈজ্ঞানিক নাম হলো - Homo sapiens.

প্রশ্নঃ ২। তোমার চেনাজানা পাঁচটি আর্থোপোডার নাম লেখ। 

উত্তরঃ আমার চেনা-জানা পাঁচটি আর্থোপোডার নাম হলো-
১। আরশোলা, ২। কাঁকড়া, ৩। চিংড়ি, ৪। রেশম পোকা, ৫। মৌমাছি। 

প্রশ্নঃ ৩। চিংড়ি কোন পর্বের প্রাণী? এদের বৈশিষ্ট্যগুলো কী কী? Shrimp is an animal of which phase? What are their characteristics?

উত্তরঃ চিংড়ি আর্থোপোডা পর্বের প্রাণী। 
এদের বৈশিষ্টগুলো হলো -
ক) দেহ খণ্ডায়িত ও সন্ধিযুক্ত থাকে।
খ) চিংড়ির মাথায় একজোড়া পুন্জাক্ষি এবং একজোড়া অ্যাণ্টেনা থাকে। 
গ) চিংড়ির নরম দেহ শক্ত কাইটিনসমৃদ্ধ আবরণে আবৃত।
ঘ) দেহে রক্তপূর্ণ গহব্বর হিমোসিল থাকে।

 

প্রশ্নঃ ৪। স্তন্যপায়ী প্রাণীদের বৈশিষ্ট্যূগুলো লেখ। Write the characteristics of mammals.

উত্তরঃ স্তন্যপায়ী প্রাণীদের বৈশিষ্ট্যূগুলো নিম্নরুপ - 
ক) দেহ লোম দিয়ে আবৃত থাকে।
খ) কয়েকটি ছাড়া সকলেই সন্তান প্রসব করে। 
গ) বাচ্চা মাতৃদুগ্ধ পান করে। 
ঘ) উষ্ম রক্তের প্রাণী।
ঙ) চোয়ালে বিভিন্ন প্রকারের দাঁত থাকে।

 

প্রশ্নঃ ৫। ইউরোকর্ডাটার বৈশিষ্ট্যগুলো কী কী ? What are the features of Eurocordata?

উত্তরঃ ইউরোকর্ডাটার বৈশিষ্ট্যগুলো হলো - 
ক) প্রাথমিক অবস্থায় ফুলকা রন্ধ্র থাকে এবং পৃ্ষ্ঠীয় ফাঁপা স্নায়ুরজ্জু থাকে। 
খ)ইউরোকর্ডাটা পরিণত প্রাণীতে নটোকর্ড থাকে না, কিন্তু এদের লার্ভা অবস্থায় কেবল লেজে নটোকর্ড থাকে। 


অনুশীলনের জন্য দক্ষতাস্তরের প্রশ্ন ও উত্তর 

প্রশ্নঃ ১। দ্বিপদ নামকরণের প্রবক্তা কে? Who is the proponent of binomial naming?

উত্তরঃ  দ্বিপদ নামকরণের প্রবক্তা ক্যারোলাস লিনিয়াস। 

প্রশ্নঃ ২। প্রাণীজগতের কোন ধাপে সব থেকে বেশি সংখ্যক প্রাণী থাকে? Which phase of the animal kingdom has the largest number of animals?

উত্তরঃ প্রাণীজগতের রাজ্য ( Kingdom) ধাপে সবচেয়ে বেশি সংখ্যক প্রাণী থাকে। 

প্রশ্নঃ ৩। শ্রেণিবিন্যাসের কোন ধাপে সবচেয়ে কম সংখ্যক প্রাণী থাকে? Which step of the hierarchy has the least number of animals?

উত্তরঃ শ্রেণিবিন্যাসের প্রজাতি (Species) ধাপে সবচেয়ে কম সংখ্যক প্রাণী থাকে। 

প্রশ্নঃ ৪। কোন পর্বভুক্ত প্রাণীরা সকলেই সামুদ্রিক? Which group of animals are all marine?

উত্তরঃ  একাইডার্মাটা পর্বভুক্ত প্রাণীরা সকলেই সামুদ্রিক। 

প্রশ্নঃ ৫। একটি জলচর স্তন্যপায়ী প্রাণীর নাম লেখ। Write the name of an aquatic mammal.

উত্তরঃ একটি জলচর স্তন্যপায়ী প্রাণীর নাম তিমি।

প্রশ্নঃ ৬। অরীয়ভাবে প্রতিসম কাকে বলে?

উত্তরঃ কোনো প্রাণীকে কেন্দ্রীয় অক্ষ বরাবর ছেদ করে যতবার খুশি সমান দুভাগে ভাগ করা গেলে তাকে অরীয় প্রতিসম বলে।

প্রশ্নঃ ৭। নিডোব্লাস্ট কাকে বলে?

উত্তরঃ নিডারিয়া পর্বের প্রাণীদের এক্টোডার্ম স্তরে বিশেষ বৈশিষ্ট্যপূর্ণ যে কোষ থাকে তাকে নিডোব্লাস্ট বলে। 

প্রশ্নঃ ৮। পানি সংবহনতন্ত্র কাকে বলে? What is the water circulation system?

উত্তরঃ একাইডার্মাটা পর্বের প্রাণীদের দেহে পানি সংবহনে অংশগ্রহনকারী নালিকা দিয়ে যে তন্ত্র গঠিত হয় তাকে সংবহনতন্ত্র বলে।

প্রশ্নঃ ৯। সিলোম কাকে বলে? What is Siloam?

উত্তরঃ বহুকোষী প্রাণীর পৌষ্টিক নালি এবং দেহ প্রাচীরের মধ্যবর্তী ফাঁকা স্থানকে সিলোম বলে।

প্রশ্নঃ ১০। উভচর প্রাণী কাকে বলে?

উত্তরঃ যে সব প্রাণীর জীবনচক্রে বাচ্চা অবস্থায় পানিতে এবং পরিণত অবস্থায় স্থলে কাটে তাদের উভচর প্রাণী বলে।

অনুধাবনমূলক প্রশ্ন।

প্রশ্নঃ ১। বাঘ ও মানুষের সাদৃশ্য- ব্যাখ্যা কর।

উত্তরঃ বাঘ ও মানুষের মধ্যে সাদৃশ্য হলো স্তন্যপায়ী ( Mammalia ) শ্রেণি অন্তভূক্ত। এদের বৈশিষ্ট্য হচ্ছে - 
ক) দেহে লোম থাকে।
খ) সন্তান প্রসব করে।
গ) সন্তান মাতৃদুগ্ধ পান করে।


প্রশ্নঃ ২। তারা মাছ মাছ নয় কেন? Why are star fish is not fish?

উত্তরঃ তারা মাছের দেহে মাছের বৈশিষ্ট্যে থাকে না । এর দেহে স্তনগ্রন্থি থাকে এবং বাচ্চা প্রসব করে যা স্তন্যপায়ী প্রাণীর বৈশিষ্ট্য। এ কারনেই তিমি মাছ নয়।

প্রশ্নঃ ৩। তিমিমাছ মাছ নয় কেন?

উত্তরঃ তিমির দেহে মাছের বৈশিষ্ট্য থাকে না। এর দেহে স্তনগ্রন্থি থাকে এবং বাচ্চা প্রসব করে যা স্তন্যপায়ী প্রাণীর বৈশিষ্ট্য। এ কারনে ই তিমিমাছ মাছ নয়।

প্রশ্নঃ ৪। বাদুর যে পাখি নয় তার দুটি কারন দাও। 

উত্তরঃ বাদুর যে পাখি নয় তার দুটি কারন নিম্নরুপ - 
ক) বাদুড়ের দেহ পাখির মতো পালকে আবৃত নয়। দেহ লোমে আবৃত।
খ) বাদুড়ের চোয়াল পাখির মতো চঞ্চুতে রুপান্তরিত হয় না। 

প্রশ্নঃ ৫। উভচর ও সরীসৃপের দুটি প্রধান পার্থক্য উল্লেখ কর। Mention two major differences between amphibians and reptiles.

উত্তরঃ উভচর ও সরীসৃপের দুটি প্রধান পার্থক্য উল্লেখ নিম্নরুপ - 
ক) উভচর- এর ত্বক ভেজা ও গ্রন্থিযুক্ত কিন্তু সরীসৃপের ত্বক শুল্ক ও আ্ইশযুক্ত।
খ) উভচর পানিতে ডিম পাড়ে এবং ব্যাঙ্গচি দশা দেখা যায়। কিন্তু সরীসৃপ মাটিতে ডিম পাড়ে এবং বাচ্চা ফুটে । 

প্রশ্নঃ ৬। কন্ড্রিকথিস ও অসটিকথিস শ্রেণির দুটি পার্থক্য লেখ।

উত্তরঃ কন্ড্রিকথিস ও অসটিকথিস শ্রেণির দুটি পার্থক্য - 
১) কঙ্কা তরুনাস্থিময়। == কঙ্কাল অস্থিময়।
২) দেহ প্লাকয়েড আইশ দ্বারা আবৃত এবং ফুলকাছিদ্র থাকে। কানকো থাকে না। === দেহ সাইক্লোয়েড ও টিনয়েড আইশ দ্বারা আবৃত এবং ফুলকা কানকো দ্বারা ঢাকা থাকে। 

Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url