কলেরা কি ? কলেরা রোগের জীবাণু কিভাবে সংক্রমন ঘটায়? কলেরা রোগের কারন, লক্ষণ, প্রতিকার।

কলেরা রোগের জীবাণুর সংক্রমণ কিভাবে ঘটে? কলেরা রোগের কারন,  লক্ষণ,  প্রতিকার ব্যবস্থা ।

কলেরা রোগের কারন, লক্ষণ, প্রতিকার।


কলেরা কি - what is cholera

কলেরা এক ধরনের রোগ। এটি একটি ব্যাক্টেরিয়া জনিত রোগ। পরিবেশে স্বাস্থ্য সম্পর্কিত বিষয়গুলো যথাযথ না থাকলে কলেরার মত রোগ গুলো বেশি ছড়ায়। সামাজিক পরিষ্কার পরিছন্নতা না থাকলে সমাজে এই ধরনের রোগের পরিমান বেশি হয়। 

যেসব এলাকায় পরিষ্কার খাবার পানি, স্বাস্থ্য সুবিধা নেই সেসব এলাকা কলেরা রোগের জীবানুর আবাস স্থল। জানা যায়, প্রতি বছর ১.৩ মিলিয়ন মানুষ কলেরা রোগে আক্রান্ত হয়। 


কলেরা রোগের জীবাণুর নাম কি - What is the name of the cholera bacterium: ভিব্রিও কলেরা (Vibrio cholerae).


এটি ব্যাকটেরিয়া ঘটিত।  ক্ষুদ্রান্ত্রের একধরনের সংক্রামক রোগ।


কলেরা রোগের লক্ষণ - Symptoms of Cholera

 এই রোগের আক্রান্ত হওয়ার মূল লক্ষণ বারবার বমি ও মলত্যাগ হওয়া। অন্যান্য লক্ষণ গুলো হল-

>>>  ডায়ারিয়ার পাশাপাশি পায়ে লেগ ক্র্যাম্পের বা আঁটুনি সমস্যাও প্রকাশ পায়।

>>> হ্নদ স্পন্দন( হার্ট বিট) অস্বাভাবিক ভাবে বেড়ে যায়।

>>> অতি দ্রুত ক্লান্ত হয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা দেখা দেয়।

>>> কলেরা রোগে আক্রান্ত হলে রোগীর রক্তচাপ কমে যায়।

>>> ঘন ঘন পানি পিপাসা অনুভূব করাও কলেরা রোগের  লক্ষণ।


এসব উপসর্গ দেখা দিলেই তা কলেরা রোগ হয়েছে এমন বিবেচনা যেতে পারে তবে চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী ব্যবস্থা নিতে হবে। তা না হলে  বিষয়টি প্রাণঘাতীও হতে পারে।



কলেরা রোগের কারনগুলো - Causes of Cholera

প্রকৃতপক্ষে  কলেরা এক ধরনের পাচকতন্ত্রের সংক্রামক রোগ। ভিব্রিও কলেরা নামক জীবাণুর সংক্রমনের কারনে রোগ হয়। ক্ষুদ্রান্তে ব্যাক্টেরিয়া দ্বারা নির্গত টক্সিন এর ক্ষতিকর প্রভাবের কারনে কলেরা সংক্রমিত অবস্থা তৈরি হয়। কলেরায় পায়খানা প্রচন্ড পাতলা হয়ে যায় ও শরীরে পানি শূন্যতা দেখা দেয়। শরীরে ক্লোরাইডের স্বাভাবিক প্রবাহ ব্যহত হলে অত্যধিক পরিমান পানি বের হয়ে আসে। এর ফলে শরীরে লবন ও পানির দ্রুত ঘাটতি দেখা দেয়। 

অর্থা্ৎ অস্বাস্থ্যকর পরিবেশের কারনে আমাদের দেহে ভিব্রিও কলেরা নামক ব্যাক্টেরিয়া জীবাণুর সংক্রমনের কারনে দেহে ক্লোরাইডের ভারসাম্যতা সৃষ্টি হয় যা কলেরা নামে পরিচিত। কলেরায় শরীরে মারাত্বক পানিয় তরলের ঘাটতি দেখা দেয়।


কলেরা কারনে যেসব ঝুঁকি তৈরি হয় - Risks caused by cholera

  • স্বাস্থ্যবস্থা খুব খারাপ হয়। 
  • পেটে এসিডের মাত্রা কমে যায়। বা এসিড ঘাটতি হয়। 
  • আক্রান্ত ব্যাক্তি পানিশূন্যতায় ভুগে। 
  • মারাও যেতে পারেন। 


কলেরা রোগ নির্ণয় - Diagnosis of cholera

আক্রান্ত ব্যক্তির রোগের তীব্রতার ওপর নির্ভর করে চিকিৎসক রোগ নির্ণয়ের জন্য নিম্নোক্ত পরীক্ষাগুলো করাতে বলতে পারেন। 

>>রক্ত পরীক্ষাঃ

 শ্বেত রক্তকণিকা মাত্রা যাচাই করার জন্য এবং ইলেক্ট্রলাইট পর্যবেক্ষন করার জন্য। 

>>রক্ত গ্লুকোজ পরীক্ষাঃ

 গ্লুকোজের মাত্রা কি পরিমান কমে যেতে পারে এবং এর ওপর রোগের             স্থায়ীত্ব বুঝা যাবে।

>>পায়খানা পরীক্ষাঃ 

এর দ্বারা রোগীর পায়খানায় ভিব্রিও কলেরা জীবাণুর উপস্থিতি বা অনুপস্থিতি                পর্যবেক্ষণ করা হবে।


>>কিডনির কার্য পরীক্ষাঃ

 কিডনি সঠিকভাবে কাজ করছে কিনা তা যথাযথ যাচাই করা ।


কলেরা কি ? কলেরা রোগের জীবাণু কিভাবে সংক্রমন ঘটায়?

কলেরা রোগের চিকিৎসা পদ্ধতি - Cholera treatment method

ওরাল রিহাইড্রিশন সমাধানঃ নির্গত পানিয় তরলের যোগান দিয়ে এবং নিউট্রিয়েন্ট সরবরাহ করে শরীরে স্বাভাবিক ভারসাম্যপূর্ন অবস্থা ফিরিয়ে আনা।

ইনট্রাভেনাস ফ্লুইডস - Intravenous fluids: 

ইলেক্ট্রলাইটের ঘাটতি সংশোধন করতে এর ব্যবস্থা করা হয়। 

অ্যান্টিবায়োটিকস - Antibiotics: 

রোগীর দেহে জীবানু প্রতিরোধী অ্যান্টিবায়োটিকস সরবরাহ করতে হবে। 

জিঙ্ক সাপ্লিমেন্টস - Zinc Supplements: 

উপসর্গের উন্নতির জন্য সাপ্লিমেন্ট হিসেবে জিঙ্ক দিতে হবে।

টীকাদানঃ

অধিকাংশক্ষেত্রে ভ্রমনকারী, মানবধিকার কর্মী বা এ ধরনের ব্যাক্তির রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কম থাকে, যাদের এসিড ক্ষরন কম হয়। 



প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা - Preventive measures

>>খাবার আগে হাত ধোয়া

>>যখন বাইরে যাওয়া হয় তখন সাথে হ্যান্ড স্যানিটাইজার এবং অন্যান্য নিরাপত্তামূলক ব্যবস্থা রাখতে         হবে। 

>>কেবল ফুটানো পানি, ভালভাবে রান্না করা খাবার খেতে হবে 

>>বাসি পঁচা খাবার পরিহার করতে হবে। 

>>খাবার ঢেকে রাখতে হবে

>>কাঁচা খাবার , বিশেষ করে আধা সিদ্ধ মাছ, মাংস খাওয়া যাবে না। 

>>দুগ্ধজাত খাবার ভাল ভাবে পরীক্ষা করে নেয়ে তার পর খেতে হবে। 


Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url