পেটের আলসার কি ? আলসার এর কারন, লক্ষণ ও করণীয় কি?

আপনি জানেন কি - পেটের আলসার কি ?  আলসার কেন হয়? আলসার এর লক্ষণ গুলো কি কি ? আলসার হলে আপনার করণীয় কি? 


পেটের আলসার কি ?  আলসার এর কারন, লক্ষণ ও করণীয় কি?

আপনার পাকস্থলিতে কি ব্যাথা হয়? পেটে কি জ্বালা পোড়া করে? আপনার কি বদহজম আছে? বুক জ্বালা পোড়া করে কি? আপনি কি বমি বমি ভাব অনুভব করেন? এই লক্ষণগুলো যদি আপনার বা আপনার পরিবারের কারো মধ্যে থেকে থাকে তাহলে এই লেখা টা আপনার জন্য। বিস্তারিত জানতে সম্পূর্ন লেখাটি পড়ুন। 

পেটের আলসার কি ? - What is stomach ulcer?

আলসার মূলত পাকস্থলির রোগ বিশেষ। পাকস্থলির, গ্যাস্ট্রিক বা ডিওডেনাল আলসার হলো পরিপাক তন্ত্রের ভিতরের অংশে ক্ষত তৈরি হওয়াকে বুজায়। অনিয়মিত না খাওয়া, খাদ্যাভাস জনিত কারন, অন্যান্য অসুখ ইত্যাদি কারনে পেটের আলসার রোগ হয়ে থাকে।  

পাকস্থলীর ভেতরের পৃষ্ঠার এই ক্ষত বিভিন্নভাবে হতে পারে পাকস্থলীর ক্ষত ভিতরের প্রথম অংশ থেকে শুরু করে পাকস্থলীর শুরু পর্যন্ত হয়ে থাকে। আলসার এবং পাকস্থলীর আলসার দুই ধরনের হয়ে থাকে আলসার কে অনেক সময় পেপটিক আলসার বলা হয়। সাধারন আলসার তেমন কোন ভয়াভহ রোগ নয় তবে দীর্ঘদিন এই রোগ বিনা চিকিৎসা থাকলে এর থেকে মারাত্বক জটিল অবস্থা তৈরি হতে পারে। 

কখন ডাক্তারের পরামর্শ নিতে হবে?

আলসার হলে অনেক সময় বমির অনুভূতি হতে পারে। অনেক সময় আলসার হলে বমির সাথে উজ্জ্বল রক্ত নির্গত হয় অথবা চাকা চাকা দানাদার রক্ত মিশ্রিত উপাদান রক্তের সাথে বের হয়ে আসতে পারে। এ ধরনের পরিস্থিতিতে ডাক্তারের পরামর্শ নেয়া অত্যন্ত জরুরি।

কাল আলকাতরার মত পায়খানা হলে অতি দ্রুত ডাক্তারের পরামর্শ নিতে হবে

তীব্র ব্যথা অনুভূত হলে জরুরী ভিত্তিতে ডাক্তারের পরামর্শ নেয়া উচিত কারন এই অবস্থা রোগীর জরুরী অবস্থা সনাক্ত করে তাই ডাক্তারের সংস্পর্শে আসতে হবে।

উপরের লক্ষণগুলো প্রকাশিত হলে বুঝতে হবে আলসার অত্যন্ত ঝুকিপূর্ণ বা ভয়াভহ অবস্থায় রয়েছে এমত অবস্থায় জরুরী ভিত্তিতে ডাক্তারের সংস্পর্শে যেতে হবে। 


পরিপাকতন্ত্রের আলসার বা পেপটিক আলসার কেন হয় - Why do peptic ulcers occur?

আলসার কেন হয় তা জানার আগে আলসার বিষয়টিকে ভালোভাবে বুঝতে হবে। ইতোপূর্বে আমরা এ বিষয় মুটামুটি জেনে এসেছি।  আমরা জানি আমাদের পাকস্থলীর ভিতরের দিকে এক ধরনের পদার্থ দিয়ে একটি আস্তরণ তৈরি হয়। এই আস্তরনটি ক্ষতিগ্রস্ত হলে পাকস্থলীর ভিতরে প্রাচীরের ক্ষতস্থান সৃষ্টি হয় । এই ক্ষতস্থানটিকে আলসার পেপটিক আলসার বলা হয়। এটি সাধারণত এসিড দ্বারা ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে থাকে। 
অন্যভাবে বলা যেতে পারে আলসার হলে এ জাতীয় ক্ষতিগ্রস্ত অবস্থান। এখন পাকস্থলী প্রাচীরের ভিতরের শ্লেষমা জাতীয় পদার্থের ক্ষত হওয়াই প্রকৃতপক্ষে আলসার সৃষ্টির কারণ হিসেবে বিবেচিত হয়। পাকস্থলী প্রাচীর এর ভিতরের অংশের শ্লেষমা জাতীয় পদার্থের ক্ষত বিভিন্ন কারণে হয়ে থাকে। এখন আমরা ক্ষত হওয়ার বিভিন্ন কারণগুলো নিয়ে আলোচনা করব।

ব্যাকটেরিয়ার সংক্রমণঃ
বিভিন্ন ধরনের ব্যাকটেরিয়ার সংক্রমণ এর কারণে পাকস্থলী প্রাচীরের ক্ষতস্থান সৃষ্টি হতে পারে যে সমস্ত ব্যক্তিদের মধ্যে হেলিকোব্যাকটার পাইলোরি অন্যতম একটি ব্যাকটেরিয়া এই ধরনের ব্যাকটেরিয়ার কার্যকারিতার ফলে পেটের ভিতরে প্রাচীরে ক্ষত সৃষ্টি হয় আমরা বলতে পারি আলসার হয়েছে

ব্যা্থ নাশক ওষুধের কার্যকারীতায়ঃ
এসিক্লোফেনাক অ্যাসপিরিন এবং আইবুপ্রোফেন এছাড়াও নক্সপ্রক্সেন ইত্যাদি anti-inflammatory ড্রাগস দীর্ঘদিন গ্রহণের ফলে আলসার সমস্যা সৃষ্টি হতে পারে ।

মানসিক দুশ্চিন্তা হতাশা গ্রস্থ থেকে সৃষ্টিঃ
অতীতে মানুষের মধ্যে একটি ধারণা প্রচলিত ছিল যে মানসিক দুশ্চিন্তা হতাশা গ্রস্থ থেকে সৃষ্টি হয় কিন্তু এই ধারনার পক্ষে সঠিক কোনো প্রমাণ পাওয়া যায়নি তবে হ্যাঁ বিষাদগ্রস্ত মানুষের ক্ষুধামন্দা ও খাদ্য অনীহা থেকে আলসার সমস্যা সৃষ্টি হয়ে থাকে

খাদ্যদ্রব্যঃ
তেল বা চর্বিজাতীয় খাবার খেলে এ ধরনের রোগ হয়ে থাকে। ভাজাপোড়া বা এ ধরনের শুকনো খাবার আলসার এর মাত্রা কে ত্বরান্বিত করে। 

ফার্স্ট ফুড জাতীয় খাবারঃ
কোমল পানিয় বা ফার্স্ট ফুড খাবার আলসার রোগের অন্যতম কারন হিসেবে বিবেচিত।
মাদক দ্রব্য বা অন্যান্য নেশা দ্রব্য থেকে আলসার এর শুরু হয়। 

বিড়িসিগারেট বা তামাকজাত দ্রব্যঃ
তামাক বা তামকজাত দ্রব্য থেকে পেপটিক আলসার সৃুষ্টি করে। বিড়ি সিগারেটের মত তামাক জাত দ্রব্য ক্ষুধা মন্দাভাব জাগায় । অনিয়িমিত খাদ্যাভাস তৈরি হয় যা পরে আলসার এর কারনে পরিনত হয়। 

পেপটিক আলসার বা আলসারের  প্রকারভেদ - Types of Peptic Ulcers

পেপটিক আলসার সাধারণত তিন ধরনের হয়
  • গ্যাস্ট্রিক আলসার বা পাকস্থলীর গাত্র ক্ষত.
  • ইসোফেগাস বা খাদ্যনালীর আলসার,
  • ডিওডেনাল আলসার ক্ষুদ্রান্তের উপরিভাগের আলসার।

বিভিন্ন ভাবে ভাগ করা হলেও এগুলো মূলত পরিপাকতন্ত্রের বিভিন্ন অংশ চিহ্নিত করে পেপটিক আলসার তারপর খাদ্যনালীতে আলসার কে সাধারনত ইসোফেগাস আলসার ক্ষুদ্রান্তের আলসার কে ডিওডেনাল আলসার বলা হয় 


পেপটিক আলসার কাদের হয় - Who gets peptic ulcer?

  • অসাধারণ একটি রোগ যেকোনো বয়সের মানুষের মধ্যে হতে পারে। সাধারণত শিশু থেকে বয়স্ক যেকোনো মানুষের আলসার হতে পারে। বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই ষাটোর্ধ্ব বা তার বেশি বয়সের মানুষের মধ্যে আলসার সমস্যা বেশি দেখা যায়। এ ক্ষেত্রে নারীদের চেয়ে পুরুষদের মধ্যে আলসার রোগীর সংখ্যা তুলনামূলকভাবে বেশি ।
  • ধূমপায়ীদের আলসার হওয়ার সম্ভাবনা বেশি থাকে তাই যে সমস্ত ব্যক্তি ধূমপায়ী তারা আলসার ঝুঁকির মধ্যে থাকেন।
  • মদ্যপায়ী এবং অন্যান্য কোমল পানীয় দ্রব্য গ্রহণকারী ব্যক্তিদের আলসার হওয়ার সম্ভাবনা অনেক বেশি।
  • খাদ্যে সঠিক নিয়মানুবর্তিতা মেনে না চললে আলসার  হতে পারে। তাই যারা খাবারের সঠিক সময়ে মেনে চলেন না তারা আলসার ঝুঁকির মধ্যে থাকেন।


আলসার রোগের চিকিৎসা - Ulcer treatment

আলসার রোগের চিকিৎসা রোগের ধরনের ওপর নির্ভর করে রোগের দীর্ঘসূত্রিতা রোগীর স্বাভাবিক অবস্থা ইত্যাদি বিষয়ের উপর নির্ভর করে চিকিৎসার পদ্ধতি ভিন্ন ভিন্ন হতে পারে। সঠিকভাবে চিকিৎসার ফলে মাত্র দুই থেকে তিন মাসের মধ্যে আলসার সমস্যার সমাধান করা সম্ভব। আলসার রোগের চিকিৎসা পদ্ধতি ধারাবাহিকভাবে আলোচনা করা হলো।

  • আলসার রোগের চিকিৎসা ক্ষেত্রে রোগীকে এন্ডোস্কোপি ও আপার জিআই এক্সরে পরীক্ষা করা হয়।এসবের মাধ্যমে রোগীর অবস্থা, আলসার এর স্থান পর্যবেক্ষণ করা হয়। এসবের মধ্যে এন্ডোস্কোপি পরীক্ষাটি কষ্টকর তবে এই পরীক্ষার মাধ্যমে আলসার রোগের সঠিক নির্ণয় করা হয়। রোগীর কখনো কখনো আলসার থেকে ক্যান্সার  হতে পারে তাই জিআই টেস্ট ও এক্স-রের মাধ্যমে ক্যান্সার সম্পর্কে নিশ্চিত হওয়া যায়। 
  • আলসার রোগের চিকিৎসার ক্ষেত্রে বেশিরভাগ রোগীকে প্রোটন পাম্প ইনহিবিটর গ্রুপের ওষুধ সেবন করার জন্য বলা হয়। এই গ্রুপের ওষুধ গুলো পাকস্থলীর ভিতরে এসিড নিঃসরণের হার কমিয়ে দেয়। ফলে পাকস্থলীতে সৃষ্টি হওয়া ক্ষতস্থান আপনাআপনি ঠিক হয়ে যায়। এই গ্রুপের ওষুধ গুলো কে সাধারণত আমরা গ্যাস্ট্রিকের ওষুধ হিসেবে সেবন করে থাকে।
  • পেপটিক আলসার যদি হেলিকোব্যাকটার পাইলোরি নামক ব্যাকটেরিয়া কারণে হয়ে থাকে তাহলে এই ধরনের রোগীকে অ্যান্টিবায়োটিক খাওয়ানো হয়। এতে হেলিকোব্যাকটার পাইলোরি ব্যাকটেরিয়া মারা যায় এবং রোগী ধীরে ধীরে সুস্থ হতে থাকেন।
  • যেসব রোগীর আলসার non-steroidal anti-inflammatory ড্রাগ সেবনের কারণে হয়ে থাকে সে সমস্ত রোগীকে পিপিআই গ্রহণ করার কথা বলা হয়। অনেক ক্ষেত্রেই এ ধরনের রোগীকে প্যারাসিটামল জাতীয় ওষুধ খাওয়ার উপদেশ দেয়া হয়।
  • উপযুক্ত চিকিৎসা নিয়ে আলসার ঠিক হওয়ার পরেও রোগী পুনরায় আলসারে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। তাই রোগীকে পরবর্তীতে ডাক্তারের সংস্পর্শে থাকার পরামর্শ দেয়া হয়। অনেক ক্ষেত্রে পুরোপুরি আলসার ঠিক  হলে পুনরায় আলসার হওয়ার সম্ভাবনা থাকে না।

আলসারের ভয়াবহ দিকগুলো - The terrible aspects of ulcers

  • আলসারের মারাত্মক পর্যায়ে রোগীর  ক্ষতস্থান থেকে রক্ত এবং রক্ত বের হয়ে আসে।
  • অনেকক্ষেত্রে আলসার সংক্রমিত স্থানটি স্থানটির আস্তরণ ফুটো হয়ে যায় এধরনের অবস্থাকে পারফর্ম বলা হয়।
  • কারণে পরিপাকতন্ত্রের ভিতর খাদ্য চলাচল বন্ধ হয়ে যেতে পারে  এতে শরীর বৃত্তীয় ক্রিয়া প্রতিক্রিয়া।
  • ব্যাহত হয় আলসারের এধরনের অবস্থাকে গ্যাস্ট্রিক অ্যাবস্ট্রাকশন বলা হয়।


পেটের আলসার হলে যে সমস্ত লক্ষণ প্রকাশ পায় - All the symptoms that appear in case of stomach ulcer 

  • বমি বমি ভাব তৈরি হয়ঃ আমরা জানি আলসার মানে পাকস্থলীর ভিতর প্রাচীরে ক্ষত সৃষ্টি হওয়া। এই ক্ষত হওয়ার কারণে পরিপাকতন্ত্রের স্বাভাবিক কার্যক্রম ব্যাহত হয় এতে পাচক রস নিঃসরণ তারতম্য ঘটে। ফলে স্বাভাবিক পরিপাক ক্রিয়া নষ্ট হয়। এর ফলে বমি অনুভূত হতে পারে বিশেষ করে সকালে। এই বমি ভাব বেশি অনুভূত হলে, তেল বা চর্বি যুক্ত খাবার বিশেষ করে জাঙ্কফুট পরিহার করা দরকার ।
  • রক্তক্ষরণ হওয়াঃ গ্যাস্ট্রোইনটেস্টাইনাল গ্রন্থি থেকে রক্তক্ষরণ বিভিন্ন ধরনের রোগের ইঙ্গিত বহন করে এই ধরনের রক্তপাত হলে পাকস্থলীর মারাত্মক ক্ষতির লক্ষণ প্রকাশ পায়। রোগীর এই অবস্থা মারাত্মক আলসার রোগের ইঙ্গিত বহন করে। অনেক সময় বমির সাথে অথবা বাথরুম ব্যবহার করার সময় পাকস্থলী গাত্র থেকে রক্তক্ষরণ হতে পারে। আলসারের এই অবস্থা আলসারের চরম পর্যায়ে ধরা হয়। এ অবস্থায় রোগীকে অত্যন্ত দ্রুত ডাক্তারের শরণাপন্ন হওয়া উচিত।
  • খাবার গ্রহণে বুক জ্বালাপোড়াঃ আলসারের লক্ষণ হলো খাবার গ্রহণের পর বুক জ্বালাপোড়া করা। পাকস্থলী থেকে নির্গত পাচক রসের তারতম্যের কারণে এই ধরনের সমস্যা হতে পারে। এ ক্ষেত্রে রোগী তীব্র বুক জ্বালাপোড়া অনুভূতি হবে। এ সময় রোগীর জ্বালাপোড়া থেকে মুক্ত করার জন্য ওভার কাউন্টার এন্টাসিড  খাওয়ানো যেতে পারে। 
  • পেট ফাঁপা অনুভূতিঃ আলসার রোগীর অনেক সময় পেট ফাঁপা অনুভূতি হতে পারে। বুক জ্বালা এবং খাদ্য অনীহা থেকে এ ধরনের সমস্যার সৃষ্টি হয় পাকস্থলী সহ্য করে না এমন খাবার অথবা পর্যাপ্ত পানি না পান করার কারণে রোগী পেট ফাঁপা অনুভূতি অনুভব করতে পারে। এ ধরনের উপসর্গ আলসার রোগের ইঙ্গিত বহন করে।
  • খাদ্য অনীহাঃ তীব্র জ্বালা পোড়া প্রচন্ড ব্যথা এসব অনুভূতির কারণে আলসার রোগে আক্রান্ত রোগীর খাদ্য অনীহা সৃষ্টি হয়।  খাদ্য অনীহা অবস্থা আরও বেশি ঝুঁকিপূর্ণ আলসার সমস্যার দিকে নিয়ে যায়।
  • তীব্র ক্ষুধা অনুভব করাঃ আমরা জানি  আলসার রোগে আক্রান্ত ব্যক্তি ক্ষুধাহীনতা অনুভব করে কিন্তু কখনো কখনো নাভি এবং বুকের মধ্যবর্তী স্থানে অনুভূত ব্যথাকে ভুলবশত ক্ষুধা মনে করে। এক্ষেত্রে আলসার রোগে আক্রান্ত ব্যক্তি নিজেকে অনেক সময় প্রচন্ড ক্ষুধা অনুভব করে। তারপর খাদ্য গ্রহণের ফলে বুকের নিচে এবং পাকস্থলীর ব্যথা কিছুটা কম অনুভূত  হয়। এক্ষেত্রে ক্ষুদ্রান্তের ব্যথা দূর হয় না।
  • পিঠে তীব্র ব্যথা অনুভব করাঃ ক্ষুদ্রান্তের আলসার তীব্র আকার ধারণ করলে , সে ক্ষেত্রে অন্ত্রের প্রাচীর ভেদ করে এই ব্যথা পিঠ পর্যন্ত ছড়িয়ে পড়তে পারে। এধরনের আলসার উপশম করা অত্যন্ত কঠিন।
  • বেশি বেশি ঢেকুর ওঠাঃ আলসারের অন্যতম প্রধান একটি লক্ষণ হলো ঘন ঘন ঢেকুর। স্বাভাবিকের চেয়ে তুলনায় বেশি বেশি ঢেকুর আলসার সংক্রমণের লক্ষণ।


প্রতিকারের উপায় - Remedy

আলসার তেমন কোনো জটিল রোগ নয়। সামান্য কিছু নিয়মকানুন মেনে চললে আলসার পুরোপুরিভাবে প্রতিকার করা সম্ভব। ডাক্তারি পরামর্শ এবং সঠিক নিয়মে ওষুধ সেবনের মাধ্যমে আলসারকে পুরোপুরি নিয়ন্ত্রন করা যায়। আলসার প্রতিকারে যে সমস্ত পদক্ষেপ নেয়া যেতে পারে সেগুলো
  • মসলাজাতীয় খাবার পরিহার করা।
  • ভাজাপোড়া বা অতিরিক্ত তেল জাতীয় খাবার না।
  • ক্যাফেইনযুক্ত খাবার যেমন চা-কফি ইত্যাদি পরিত্যাগ করা।
  • বাজারে প্রচলিত ব্যথানাশক ওষুধ যেমন আইসক্রিম না খাওয়া বা  যথাসম্ভব এড়িয়ে চলা। কারণ এ সমস্ত ঔষধ আলসার সম্ভাবনা কি বাড়িয়ে দেয়।
  • ভিটামিনযুক্ত শাকসবজি এবং ফলমূল নিয়মিতভাবে ভিটামিনযুক্ত শাকসবজি কচু শাক লাল শাক নিয়মিতভাবে খাদ্য তালিকায় রাখতে হবে। এবং সমস্ত খাদ্যে ভিটামিন সি রয়েছে সে সমস্ত গ্রহণ করতে হবে।
  • বিভিন্ন প্রকার প্রক্রিয়াজাতকরণকৃত খাদ্যদ্রব্য গ্রহণ করা থেকে বিরত থাকতে হবে। যেমনঃ কোমল পানীয় ফাস্টফুড জাতীয় খাদ্য।
  • নিয়মমাফিক বিশুদ্ধ খাবার পানি গ্রহণ করতে হবে।
  • আলসারের লক্ষণ প্রকাশিত হলে সাথে সাথে ডাক্তারের পরামর্শ নিতে হবে এবং প্রয়োজনীয় চিকিৎসার ব্যবস্থা করতে হবে।
  • তামাক এবং তামাকজাত পণ্য পরিহার করতে হবে।
  • অ্যালকোহল সহ যাবতীয় কোমল পানীয় গ্রহণ থেকে বিরত থাকতে হবে।
  • পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন জামাকাপড় দ্রব্য এবং ইনফেকশন হওয়ার সম্ভাবনা নেই এমন কাপড় চোপড় পরিধান করতে হবে।
  • খাবার গ্রহণের সঠিক সময় অনুবর্তিতা মেনে চলতে। হবে নিয়মিতভাবে আঁশযুক্ত খাবার খেতে হবে



আলসার সংক্রান্ত কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্নের উত্তর

আলসার কত দিনে ভালো হয়?

নিয়মিতভাবে চিকিৎসা এবং সঠিক নিয়ম মেনে চললে আলসার দুই থেকে তিন মাসের মধ্যে নিরাময় করা সম্ভব তবে হ্যা কিছু কিছু আলসার রয়েছে যেগুলো কোনদিনই সম্পূর্ণরূপে নিরাময় যোগ্য নয় এই ধরনের আলসারের ক্ষেত্রে সঠিক নিয়ম অনুবর্তিতা এবং সঠিকভাবে চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে রোগী সুস্থ থাকতে পারবে।

আলসার হলে কি কি খেতে হয়?

  • আলসার হলে অল্প অল্প করে কিছুক্ষণ সময় পর পর খেতে হবে
  • প্রতিদিন কিছু পরিমাণ তাজা ফল শাকসবজি খেতে হবে
  • নাস্তা হিসেবে শুকনো খাবার যেমন ক্র্যাকার্স  মুড়ি ইত্যাদি খাবার খাওয়া যেতে পারে
  • মানসিক চাপ থেকে রোগীকে আলাদা রাখতে হবে
  • খাবার পরেই শুয়ে না পড়ে কিছুক্ষণ হাঁটাচলা করে তারপর বিছানায় যেতে হবে 

আলসার হলে কি ধরনের খাবার খাওয়া যাবেনা?

  • আলসার হলে সাধারণত কোমল পানীয় জাতীয় খাবার খাওয়া নিষেধ
  • প্রক্রিয়াজাতকরণ কৃত খাবার গ্রহণ করা যাবে না
  • মদ্যপান অথবা এই ধরনের খাদ্য থেকে বিরত থাকতে হবে
  • ধূমপান এবং তামাকজাত পণ্য থেকে সম্পূর্ণ বিরত থাকতে হবে
  • অতিমাত্রায়  তেলজাতীয় খাবার গ্রহণ করা যাবে না
  • ব্যথানাশক ওষুধ সেবন করা থেকে বিরত থাকতে হবে 
  • মসলাজাতীয় খাবার গ্রহণ না করাই ভালো 

Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url