কম্পিউটার কি?|| কম্পিউটার আবিষ্কার হয় কত সালে?|| কম্পিউটার কত প্রকার ও কি কি?|| কম্পিউটার কিভাবে তথ্য সঞ্চয় করে?

মেইনফ্রেম কম্পিউটার, সুপার কম্পি্‌উটার, ডিজিটাল কম্পিউটা, হাইব্রিড কম্পিউটার, এনালগ কম্পিটার, ডেস্কটপ, ল্যাপটপ, নোটবুক, ট্যাবলেট, পামটপ, কম্পিউটার, কম্পিউটার আবিষ্কার হয় কত সালে? কম্পিউটার কিভাবে চালু করতে হয়?,কম্পিউটার কিভাবে বন্ধ করতে হয়? কম্পিউটার কত প্রকার ও কি কি?, কম্পিউটার কিভাবে তথ্য সঞ্চয় করে?
Sifat Academy
Computer

কম্পিউটার কি?

কম্পিউটার হচ্ছে এক ধরনের গণনার যন্ত্রবিশেষ। শুরুতে কম্পিউটার গণনা কারী যন্ত্র হিসাবে ব্যাবহার করা হলেও বর্তমানে এর ব্যবহার বহুমুখী। 

কম্পিউটার আবিষ্কার হয় কত সালে?

কম্পিউটার কে কত সালে আবিষ্কার করেছেন এই বিষয়টি সরাসরি বলা মুশকিল। কেননা কম্পিউটার এই যন্ত্রটি একদিনে বা কোন একজন ব্যক্তি তৈরি করেছেন এমন নয়। শাব্দিক ভাবে এই শব্দটির অর্থ হয় গণনার যন্ত্র। গণনার যন্ত্র বা কম্পিউটার যাই বলা হোক না কে্ন কম্পিউটার নামক এই যন্ত্র টি এসেছে অ্যাবাকাস নামক এক ধরনের যন্ত্র থেকে। অ্যাবাকাস নামক এই যন্ত্র টি আবিষ্কৃত হয়েছিল খ্রীস্টপূর্ব ২৪০০ সাল। উনিশশতকের কথা বিবেচনা করলে গাণিতিক হিসাব নিকাশকারী যন্ত্রের কথা ভাবলেই মাথায় আসে অ্যানালিটিক্যাল ইন্জিন। যেটির সাথে আমাদেরকে পরিচয় করিয়ে দেন চার্লস ব্যাবেজ। অ্যানালিটিক্যাল ইন্জিন এর সাথে যুক্ত করা হয় অ্যালান টুরিং এর তাত্বিক ও ব্যবহারিক প্রয়োগ। যুক্তরাষ্টের ইউনিভারসিটি অব পেনসিলভার্নিয়া এর দুই জন বিশিষ্ট বিজ্ঞানিী Electronic Numerical Integrator and Computer(ENIAC) নামক একটি কম্পিউটার ডিভলপ করেন। 

কম্পিউটার কিভাবে চালু করতে হয়?

কম্পিউটার এ প্রথমে বিদ্যুৎ সংযোগ করতে হয়। তারপর কম্পিউটারের সুইচ অন করতে হয়। সিপিউ বা সেন্ট্রাল প্রসেসিং ইউনিট এ সুইচ থাকে । সুইচ টিপে অন করে দিলে ই কম্পিউটার অন হয়ে যায়। 

কম্পিউটার কিভাবে বন্ধ করতে হয়?
পাওয়ার সংযোগ বন্ধ করে দিলই কম্পিউট্প বন্ধ হয়ে যায়। তবে এভাবে বন্ধ করা উচিত নয়। কম্পিউটারের সাট ডাউন বাটন চেপে কম্পিউটার বন্ধ করা উচিত। অথবা শর্টকার্ট ব্যবহার করা যায়। Alt + F4 বাটন এক সাথে চেপে ধরে রাখলে  Shut Down অপশন দিয়ে কম্পিউটার বন্ধ করা যায়। 

কম্পিউটার কিভাবে তথ্য সঞ্চয় করে?

কম্পিউটার বা মোবাইল ফোন কীভাবে ছবি সঞ্চয় করে এবং কীভাবে মোবাইল ফোন ছবি বা ছবি এবং ছবিকে বাংলা/বাংলায় অ্যানিমেশন সহ বাইনারি উপস্থাপনায় সংরক্ষণ করে সে সম্পর্কে এখন জানব-
বর্তমান সময়ে যে কোনো মুহূর্তকে ক্যাপচার করা বা সংরক্ষন করা  কঠিন নয়। যে কোন মুহুর্তে একটি স্মার্টফোনের ক্লিকে আমরা এর ছবি তুলতে পারি বা ভিডিও ধারন করতে পারি সেই মুহূর্তটি খুশির, দুঃখের বা মজার যাই হোক না কেন। কিভাবে এই ছবিগুলো স্মার্ট ডিভাইসে বা কম্পিউটারে সেভ করা যায় তা জানার চেষ্টা করব।
আমরা সবাই এরকম দৃশ্য দেখেছি৷
যেখানে 1 এবং 0 নম্বরগুলি দেখানো হয়েছে ভিন্ন ভিন্ন ভাবে৷ এটি 1 এবং 0 স্মার্ট কম্পিউটার এর মাধ্যমে ছবি সঞ্চয় করে শূধু স্মার্টফোন ই নয় যেকোন ইলেক্ট্রিক ডিভাইসে একই ভাবে ছবি সংরক্ষন করে থাক। প্রথমে দেখা যাক কিভাবে স্থির কোন চিত্রকে এই 1 এবং 0-তে রূপান্তরিত করা হয়৷ 
একটু মনোযোগ দিয়ে লক্ষ্য করলে মনে হবে এই চিত্রটি খুব সহজ এবং সরল।
Sifat Academy
Normal image view
এটি  একটি খুব সাধারন ছবি। এই সাধারন ছবি টি দিয়ে আমরা দেখার চেষ্টা করব যে কিভাবে কম্পিউটার তথ্য সংরক্ষন করে থাকে।  নিচের ছবিটির দিকে লক্ষ্য করি-
SIfat Academy
Pixel view of Image

ছবিটিকে একটু ভালভাবে লক্ষ্য করলে আমরা কি দেখতে পাচ্ছি???
ছবিটি ছোট ছোট অংশে বা খন্ডে বিভক্ত। 
এই ছোট্ট প্রতিটি ঘরকে বা অংশকে এক একটি পিক্সেল বলা হবে। Pixel। এই চিত্রটি 12 পিক্সেল চওড়া এবং 16 পিক্সেল দীর্ঘ বা পিক্সেল হচ্ছে Picture বা  Element এর সম্নিত রুপ। 
অর্থাৎ 
Pixel= Picture + Element
ছবির চিহ্নিত ঘরটিতে লক্ষ্য করুন। এখানে প্রথম ঘরটিকে স্মার্টফোন white দেখবে । স্মার্ট ফোন বা কম্পিউটার এ্ই ঘরটিকে W দিয়ে চিহ্নিত করবে। একইভাবে পাশের ফাকা ঘরটিকেও  W দিয়ে প্রকাশ করবে। কিন্তু ৩ নং ঘরটি কালো , আর তাই এই ঘরটিকে  B দিয়ে প্রকাশ করবে। এভাবে ১ম লাইন, তারপর ২য় লা্ইন এবং পর্যায়ক্রমে স্মার্টফোন সম্পূর্ণ ছবিটকে W এবং B কোডে রুপান্তরিত করবে। তারপর কম্পিউটার বা স্মার্টফোন প্রতিটি পিক্সেলকে নির্দেশকারী W এবং B কোডকে বাইনারি কোডে রূপান্তর করবে৷ এখানে প্রশ্ন হতে পারে -কেন কম্পিউটার বা স্মার্টফোন ছবি কে বাইনারি কোডে রূপান্তর করে? উত্তর লুকিয়ে আছে একটি বস্তুর মধ্যে যার নাম ট্রানজিস্টর। ইলেক্ট্রিক ডিভাইসে ট্রানজিস্টর মূলত সুইচ হিসেবে কাজ করে। ইলেক্ট্রিক ডিভাইসে ট্রানজিস্টর সক্রিয় বা চালু হলে এটি 1 গণনা হবে এবং এটি নিষ্ক্রিয় হলে এটি 0 হিসাবে গণনা করা হবে। কম্পিউটারে বা স্মার্টফোনে যেহেতু ট্রান্জিস্টারে সাহায্যে যেকোন তথ্য উপস্থাপন করা যায় তাই সকল ধরনের কোডকে বাইনারিতে রুপান্তরের প্রয়োজন হয়। কাম্পিউটারে বা স্মার্টফোনে W, B অথবা যেকোন প্রতিককে বাইনারিতে রুপান্তরিত করার জন্য ব্যবহার করা হয় ইউনিকোড পদ্ধতি।
Sifat Academy
Letter to Hexadecimal conversion

প্রথমত,  প্রাপ্ত W,B কোড গুলো  Hexadecimal এ তারপর তা  Binary রুপান্তর হয়।
ছবিগুলিকে বাইনারিতে রূপান্তর করতে হয় যাতে একটি কম্পিউটার তাদের প্রক্রিয়া করতে পারে যাতে সেগুলি আমাদের স্ক্রিনে দেখা যায়। ডিজিটাল ছবি পিক্সেল দিয়ে তৈরি। একটি চিত্রের প্রতিটি পিক্সেল বাইনারি সংখ্যা দ্বারা গঠিত।  যদি আমরা বলি যে 1 হল কালো (বা সুইচ চালু) এবং 0 হল সাদা (বা সুইচ বন্ধ), তাহলে বাইনারি ব্যবহার করে একটি সাধারণ কালো এবং সাদা ছবি তৈরি করা যেতে পারে। ছবি তৈরি করতে একটি গ্রিড সেট করা যেতে পারে এবং বর্গাকার রঙিন (1 – কালো এবং 0 – সাদা)। কিন্তু গ্রিড তৈরি করার আগে গ্রিডের আকার জানা দরকার। এই ডেটাকে মেটাডেটা বলা হয় এবং কম্পিউটারের একটি চিত্রের আকার জানতে মেটাডেটা প্রয়োজন। যদি তৈরি করা ছবির মেটাডেটা 10x10 হয়, তাহলে এর মানে হল ছবিটি 10 পিক্সেল জুড়ে এবং 10 পিক্সেল নিচে হবে।
ছবির গুণমান ছবির রেজোলিউশন দ্বারা প্রভাবিত হয়। একটি চিত্রের রেজোলিউশন হল পিক্সেলগুলি কতটা শক্তভাবে প্যাক করা হয়েছে তা বর্ণনা করার একটি উপায়।
Sifat academy
ছবি থেকে বাইনারি সংখ্যায় রুপান্তর

একটি কম-রেজোলিউশনের ছবিতে, পিক্সেলগুলি বড় তাই স্থান পূরণ করতে কম প্রয়োজন৷ এর ফলে ব্লকি বা পিক্সেলেড দেখায় এমন ছবি দেখা যায়। একটি উচ্চ রেজোলিউশনের একটি ছবিতে বেশি পিক্সেল রয়েছে, তাই আপনি যখন এটিকে জুম ইন বা প্রসারিত করেন তখন এটি অনেক ভালো দেখায়। বেশি পিক্সেল থাকার নেতিবাচক দিক হল ফাইলের আকার বড় 
এভাবে কম্পিউটার বা যেকোন ডিজিটাল ডিভাইস ছবি, অডিও বা ভিডিও ফাইল সংরক্ষন করে রাখে। 

কম্পিউটার কোন পদ্ধতিতে কাজ করে?

কম্পিউটার মূলত বাইনারি সংখ্যা পদ্ধতি তে কাজ করে। বা্ইনারি সংখ্যা পদ্ধতিতে বেস ২। অর্থাৎ ০,১ ব্যবহার করে কম্পিউটার যাবতীয় কাজ সমাধান কর থাকে। বাইনারি সংখ্যা পদ্ধতিকে মেশিন  ল্যানগুয়েজ বা নিম্ন মানের ল্যানগুয়েজ বলা হয়। 

কম্পিউটার কি কি কাজে ব্যবহার হয়?

  • গবেষনা কাজে ।
  • চিকিৎসা কাজে
  • শিক্ষার ক্ষেত্রে। 
  • শিল্প ক্ষেত্রে উৎপাদনমূলক কাজে। 
  • নিরা পত্তার কাজে। 
  • অন্যান্য । 

কম্পিউটার কত প্রকার ও কি কি?

গঠন এবং ক্রিয়া নীতির ওপর ভিত্তী করে কম্পিউটারকে প্রধানত তিন ভাগে ভাগ করা হয়। 
যথাঃ
  • এনালগ
  • হাইব্রিড
  • ডিজিটাল

ডিজিটাল কম্পিউটার কে আবার চার ভাগে ভাগ কার হয়। 
এগুলো হলো-
  • সুপার,
  • মেইনফ্রেম,
  • মিনিফ্রেম এবং
  • মাইক্রো কম্পিউটার।
মাইক্রো কম্পিউটার আবার কয়েক প্রকার হতে পারে-
  • ডেস্কটপ,
  • ল্যাপটপ,
  • নোটবুক,
  • ট্যাবলেট ও
  • পামটপ।

এনালগ কম্পিটারঃ

যেকল কম্পিউটার বৈদ্যুতিক সংকেতের ওপর নির্ভর করে ইনপুট গ্রহন করে প্রক্রিয়াকরনের কাজ সম্পাদন করে সে সব কম্পিউটারকে অ্যানালগ কম্পিউটার বলা হয়। তথ্য প্রক্রিয়াকরণ ও হিসাবের জন্য অ্যানালগ কম্পি্‌উটারে বর্ণ বা অংকের পরিবর্তে ক্রমাগত পরিবর্তনশীল বা অ্যানালগ বৈদ্যুতিক সিগনাল ব্যবহার করে থাকে। তথ্য প্রক্রিয়া করণের পর তা সাধারনত মিটার ওসিলোস্কোপ ইত্যাদিতে প্রদর্শিত হয়। 

ডিজিটাল কম্পিউটাঃ

যে সকল কম্পিউটারে বাইনারি পদ্ধতিতে বা ডিজিটাল পদ্ধতিতে ক্রিয়া সম্পাদন করে থাকে সে সকল কম্পিউটারকে ডিজিটাল কম্পিউটার বলা হয়। তথ্য প্রক্রিয়াকরন বা হিসাবের জন্য ডিজিটাল কম্পিউটার বৈদ্যুতিক সিগনালের পরিবর্তে ডিজিট (১/০) ব্যবহার করে থাকে। তথ্য প্রক্রিয়া বা হিসাবের পর তা ডিজিটের মাধ্যমে প্রদর্শিত হয়। বিশ্বের প্রথম ডিজিটাল কম্পিউটার হল এবিসি কম্পিউটার । 
বর্তমান এ বাজারে প্রচলিত সব কম্পিউটার ই ডিজিটাল কম্পিউটার। 

হাইব্রিড কম্পিউটারঃ

হাইব্রিড কম্পিউটার হচ্ছে এনালগ এবং ডিজিটাল উভয় পদ্ধতির সন্বয়ে তৈরি কম্পিউটার । এগুলোর ইনপুট এনালগ পদ্ধতির কিন্তু আউটপুট ডিজিটাল পদ্ধতির । যেমনঃ মিশাইল , সমরাস্ত্র, বৈজ্ঞানিক গবেষণা, নভোযান, রাসায়নিক দ্রব্যের গুনাগন যাচাই, পরমানুর গঠন ইত্যাদি কাজে হাইব্রিড কম্পিউটার ব্যবহার করা হয়। 

সুপার কম্পি্‌উটারঃ

ক্ষমতা আকৃতি ইত্যাদির ভিত্তিতে অতি বড় কম্পিউটারকে বলা হয় সুপার কম্পিউটার বলে। এ কম্পিউটার অতি শক্তিশালী। সুপার কম্পিউটার সেকেন্ডে বিলিয়ন বিলিয়ন কাজ সমাধান করতে পারে। সুক্ষ্ম বৈজ্ঞানিক গবেষণা এবং বিপুল পরিমান তথ্য বিশ্লেষনে নভোযান পরিচালনা , জঙ্গিবিমান নিয়ন্ত্রনে সুপার কম্পিউটার ব্যবহার করা হয়। 

মেইনফ্রেম কম্পিউটারঃ

সুপার কম্পি্‌উটার এর চেয়ে ছো্ট আকারের এবং পার্সোনাল কম্পিউটার এর চেয়ে বড়  কম্পিউটারকে মেইনফ্রেম কম্পিউটার বলা হয়। 
যেমনঃ ব্যাংক, বীমা, অর্থলগ্নিকারী প্রতিষ্ঠানের কাজে মেইনফ্রেম ব্যবহার করা হয়। 
কোন কোম্পানি প্রথম পার্সোনাল কম্পিউটার উদ্ভাবন করে

Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url