বজ্রপাত কি? কিভাবে এর সৃষ্টি হয়? বজ্রপাতের সময় আমাদের করণীয় কি?

বজ্রপাত কি? কিভাবে এর সৃষ্টি হয়? বজ্রপাতের সময় আমাদের করণীয় কি?

বজ্রপাত কি?
বজ্রপাতের দৃশ্য

অত্যন্ত রহস্যময় আমাদের এব পৃথিবী। এখানে প্রতিনিয়ত ঘটে চলেছে নানান ঘটনা। বৈচিত্র‌্যময় এই পৃথিবীর তেমনি একটি ঘটনা হল বজ্রপাত। বজ্রপাত সম্পর্কে  কিছু বিষয় আমরা স্বভাবতেই জেনে থাকি তবে এই অংশে বজ্রপাত সম্পর্কে আর বেশি কিছু জানার চেষ্টা করব।


বজ্রপাত একটি প্রাকৃতিক ঘটনা। সারা পৃথিবীতে  প্রতি বছর বজ্রপাতে অনেক মানুষের প্রানহানী ঘটে এবং অনেক ক্ষয়ক্ষতি হয়। 


বজ্রপাত  কি ?- what is lightning?

বজ্রপাত হল আকাশে আলোর ঝলকানী বিশেষ। এ সময় বজ্রপাত সংঘটিত এলাকায় মানে কয়েক লাখ ভোল্টের কারেন্ট উৎপন্ন করে যা তাপ ৩০ হাজার ডিগ্রি সেন্টিগ্রেড তাপমাত্রার সমপরিমান। এখানে বুঝার সুবিধার জন্য বলা যেতে পারে ৩০ হাজার ডিগ্রি সেন্টিগ্রেড তাপমাত্রা যা সূর্যের পাঁচগুণ বেশি। এ সময়  বাতাসের প্রসারন এবং সংকোচনের ফলে বিকট শব্দ সৃষ্টি হয়। বজ্রপাতের সময় বৈদ্যুতিক আধানের নির্গমন দুটি মেঘের মধ্যে অথবা একটি মেঘ এবং ভূমির মধ্যেও সংঘটিত হতে পারে। বজ্রপাতের সময় সেখানে ডিসি কারেন্ট উৎপন্ন হয়।


কিভাবে বজ্রপাত  সৃষ্টি হয়? - How is lightning created?

বছরের বিভিন্ন সময় পত্র-প্রত্রিকা, টেলিভিশনে  মাধ্যমে দেশের বিভিন্ন স্থানে বজ্রপাতে  মৃত্যের কথা শোনা যায়। প্রতি বছল উল্লেখযোগ্য সংখ্যক মানুষ আমাদের দেশে বজ্রপাতে মারা যায়। এবার আমরা জানার চেস্টা করব, কেন কিভাবে বজ্রপাত সৃস্টি হয়। বায়ূমন্ডলের উপরের অংশের তাপমাত্রা নীচের অংশের  তুলনায় কম থাকে। এই কারনে অনেক সময় দেখা যায়,নীচের দিক থেকে তুলনামূলক হালকা মেঘ উপরের দিকে প্রবাহিত হয়। উপরের দিকে উঠতে থাকা এ ধরনের মেঘকে থান্ডার ক্লাউড ( Thunder Clouds) বলে হয়। 
কিভাবে বজ্রপাত  সৃষ্টি হয়? - How is lightning created?
Thunder Clouds


অন্যান্য মেঘের মত এ মেঘেও ছোট ছোট পানির কনা বা অতি ক্ষুদ্র জলীয়বাষ্প থাকে। এভাবে উপরে উঠতে উঠতে পানির পরিমান বৃদ্ধি পেতে থাকে অর্থাৎ এ ধরনের মেঘে পানির ঘনত্ব বাড়তে থাকে। এ ভাবে বৃদ্ধি পেতে পেতে পানির পরিমান এক সময় 5 মিঃমিঃ এর বেশী হয়, তখন পানির অনুগুলো আর পারস্পারিক বন্ধন ধরে রাখতে পাড়ে না। তখন এরা আলাদা-Disintegrate হয়ে যায়, ফলে সেখানে বৈদ্যুতিক আধানের বা চার্জ (Electric Charge) সৃস্টি হয়।  আর এভাবে সৃষ্ট আধানের মান নিচের অংশের চেয়ে উপরে বেশী হয়। অর্থাৎ বিভব পার্থক্যের (Potential difference) সৃষ্টি হয়। এই কারনেই উপর হতে নিচের দিকে বৈদ্যুতিক আধানের বা চার্জের  নির্গমন (Transmission) হয়। বৈদ্যুতিক আধানের বা চার্জের  আকস্মিক স্থানান্তর এর কারনে এ সময় আমরা আলোর ঝলকানি (Lightning) দেখতে পাই।

আর ঘটনার সময় উক্ত এলাকায় বাতাসের প্রসারন (Expansion) এবং সংকোচনের (Contraction)ঘটে।  ফলে আমরা বিকট শব্দ শুনতে পাই। এ ধরনের বৈদ্যুতিক আধানের স্খানান্তর দুটি মেঘের মধ্যে অথবা একটি মেঘ এবং ভূমির মধ্যে ও হতে পারে।



বজ্রপাতের সময় আমাদের কি কি করণীয় - What should we do during lightning?

বজ্রপাতের সময় আমরা যদি সচেতন থাকি তাহলে আমরা এর হাত থেকে রক্ষা পেতে পারি এবং ক্ষয়ক্ষতির পরিমান কমাতে পারি-
  1. বজ্রপাতের সময় কোন খোলা স্থানে বা খেলার মাঠে দাড়াব না।
  2. গাছের উপর বজ্রপাত বেশী হয়। তাই বড় কোন গাছের নিচে দাঁড়ানো যাবে না।
  3. পানির কাছে অর্থাৎ কোন জলাশয়ের কাছাকাছি থাকবেন না,
  4. রাস্তায় সাইকেল বা মটরসাইকেলের উপর থাকলে, অতি দ্রুত নিরাপদ স্থানে আশ্রয় গ্রহন করুন।
  5. যদি খোলা মাঠ বা খোলা জমিতে থাকেন, তবে লক্ষ্য করুন তার টানা কোন বৈদুত্যক খুটি আছে কিনা। যদি থাকে তবে খুটি ২টির মাঝখানে তারের 
  6. নিচে পায়ের পাতা উচু করে পাতার উপর মাথা নিচু করে বসে থাকুন।
  7. বজ্রাহত কোন ব্যাক্তিকে কোনভাবেই খালি হাতে স্পর্শ করা যাবে না, কারন তার শরিরে তখনও বিদুত্য থাকতে পারে।
  8. সমগ্র পৃথিবীতে প্রতি সেকেন্ডে কোথাও না কোথাও 100 বজ্রপাতের ঘটনা ঘটে, সুতরাং সাবধান থাকতে হবে।
Next Post Previous Post
1 Comments
  • Butterflies
    Butterflies 24 October 2022 at 03:19

    nice

Add Comment
comment url